MMABangladesh.

Home

বিশ্বজয় করতে চান মুনজুর আলম

post8

বিশ্বজয় করতে চান মুনজুর আলম, কঠোর পরিশ্রম, একনিষ্ঠ অধ্যবসায় এনে দেয় সফলতা। এর অন্যতম দৃষ্টান্ত মেহেরপুরের সীমান্তবর্তী গাঁড়াবড়িয়া গ্রামের মুনজুর আলম বিশ্বাস। এখন তাঁর বয়স ২১। প্রথমে ইউটিউব থেকে প্রশিক্ষণ শুরু করে মাত্র তিন বছরে ভারতের মাটিতে মিক্সড মার্শাল আর্টে (এমএমএ) জিতেছেন ৩টি স্বর্ণপদক। এখন স্বপ্ন দেখছেন বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ও ইউএফসি -তে নাম লেখানোর। করপোরেট এর পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মুনজুর ওয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ ও ইউএফসি তে জিতে দেশের পতাকা উড়াতে চান বিশ্ব পরিমণ্ডলে। মুনজুর জানান, জানুয়ারির মাঝামাঝি তিনি ও তাঁর বন্ধু হুছাইন যাবেন থাইল্যান্ডে। যদিও থাইল্যান্ডে তাঁদের যাওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালের এপ্রিলে। করোনার কারণে আটকে যায় থাইল্যান্ড যাত্রা। আবারও সেই সুযোগ হাতছানি দিচ্ছে। সেখানে দুই মাসের প্রশিক্ষণ শেষে অংশ নেবেন থাইল্যান্ড ফাইটিং চ্যাম্পিয়নশিপে। তাদের কে এই চ্যাম্পিয়নশীপ এর জন্য স্পন্সর করছে আমেজিং ফ্যশন লিমিটেড নামক একটি সনামধন্য পোষাক প্রস্তুতকারী কম্পানি। মুনজুর আরও জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে ওয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের মালিক ছেত্রি সিতিওডটংয়ের সাথে। তিনি জানিয়েছেন শিগগিরই বাংলাদেশ থেকে একজনকে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য বাছাই করা হবে। সে আশায় তিনি (মুনজুর) স্বপ্ন দেখছেন ওয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে নিজের নাম ওঠাবার। জানা গেছে, মুনজুর ও তাঁর বন্ধু হুছাইনকে দেখে জেলার অনেকেই আগ্রহী হয়েছেন এ খেলায়। নিজ বাড়িতে মঞ্জুরুল খুলেছেন মেহেরপুর টপ টিম এম এম এ ফাইটার একাডেমি। সেখানে এখন ছাত্র সংখ্যা ২৫। তাঁরা নিয়মিতই প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। এরই মধ্যে ঢাকাতে ন্যাশনাল পর্যায়ে খেলায় অংশ নিয়েছেন ৫ জন। এদের মধ্যে গাংনী উপজেলার ধলা গ্রামের মওদুদ হোসেন, কুতুবপুর গ্রামের লিটন হোসেন ও রামদাসপুর গ্রামের উদয় আহম্মেদ ন্যাশনাল পর্যায়ে স্বর্ণপদক জিতেছেন। আর ব্রোঞ্জ জিতেছেন মেহেরপুর শহরের বড়বাজার এলাকার শামীম মোহাম্মদ রাজ ও গোভিপুর গ্রামের রাজু মিয়া। মুনজুর জানান, কাজটি তাঁর জন্য এত সহজ ছিল না। এ জায়গায় আসতে তাঁকে অনেক দুর্গম পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। ছেলেবেলা থেকেই সাদাকালো টিভিতে রেসলিং দেখে আসক্ত হন। হতে চেয়েছিলেন রেসলার। কিন্তু প্রত্যন্ত অঞ্চলে সে সুযোগ পাননি। ইউটিউব চ্যানেলে দেখতে থাকেন রেসলিংয়ের ভিডিও। ২০১৪ সালে ইউটিউবে খোঁজ পান এম এম এ মার্শাল আর্ট খেলার। দেখতে শুরু করেন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের ভিডিও। কিছু সরঞ্জাম কিনে শুরু করেন বাড়িতেই প্রশিক্ষণ। এ যুবক আরও জানান, ভিডিও দেখে দেখে সেগুলো রপ্ত করতে থাকি। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোচ খুঁজতে থাকি। ২০১৭ সালের দেখা পান কোচ ঢাকার কাগেরায়ু ক্লাবের রাজন হালদার লিটনের। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয় কথা চালাচালি। অবশেষে তাঁর হাত ধরে চলে আসেন ঢাকায়। মুনজুর বলেন, ২০১৮ সালে অল বাংলাদেশ ন্যাশনাল মিকস মার্শাল আর্ট অ্যাসোসিয়েশন আমাকে পাঠায় কলকাতায় নক আউট নাইট ইন্টারন্যাশনাল এমএমএ চ্যাম্পিয়নশিপে। সেখানে স্বর্ণপদক জিতি। ২০১৯ সালে কলকাতার বালিগঞ্জে বুম আই পি এফ এল-১১ চ্যাম্পিয়নশিপেও জয় লাভ করি। একই বছরে কলকাতার সল্টলেকে বুম আই পি এফ এল-১২ চ্যাম্পিয়নশিপে তৃতীয়বারের মতো লাল সবুজের পতাকার ওড়াই। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান রানা বলেন, খেলাটি সম্পর্কে আগে কিছুই জানতাম না। এটিকে সবাই পাগলামি মনে করতাম। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় তাঁদের এমন অর্জনে খুশি এলাকাবাসী। ছেলেগুলোকে নিয়ে এখন আমরা গর্ব করি। ছেলেগুলো যাতে আরও এগিয়ে যেতে পারে সে লক্ষ্যে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার দাবি জানাচ্ছি। জেলা ক্রীড়া সংস্থার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মৃধা মো. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভায় আলোচনা করে মুনজুরকে সহযোগিতা করা হবে।


Previous Next